সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বক সবারই কাম্য। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা হারাতে শুরু করে। এ সময়ে বিশেষ যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে এবং স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে কিছু বৈজ্ঞানিক টিপস ফলো করা যেতে পারে। আজকে আমরা প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার ১০টি বৈজ্ঞানিক টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
১. ত্বকের জন্য ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো এড়িয়ে চলুন
আমাদের ত্বক প্রতিদিন নানা ধুলাবালি ও ময়লার সংস্পর্শে আসে। নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার না করা, ময়লা ত্বক নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া, মেকআপ ঠিকমতো রিমুভ না করা, এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার না করার মতো অভ্যাস ত্বকের স্বাস্থ্য নষ্ট করে। এ ধরনের ক্ষতিকর অভ্যাস এড়িয়ে চলতে হবে, যাতে ত্বক প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল থাকে।
২. রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন
গভীর রাতে ঘুমানোর অভ্যাস ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। ঘুমানোর সময় ত্বক নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করে এবং নতুন কোষ তৈরি হয়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ত্বকের ক্ষতি হয়। তাই প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল ত্বক পেতে নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
৩. বাইরের ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার পরিহার করুন
অতিরিক্ত তেল এবং মশলাযুক্ত খাবার হজম প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। এর প্রভাব ত্বকে দেখা দেয় ইনফ্ল্যামেশন, একনে, এবং ত্বকের কালচেভাব হিসেবে। একইভাবে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার কোলাজেন ভেঙে ফেলে এবং ত্বকের তারুণ্য দ্রুত হারিয়ে যায়। তাই বাইরে খাওয়া এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার বর্জন করুন।
৪. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন
উজ্জ্বল ত্বক পেতে স্বাস্থ্যকর ডায়েট অপরিহার্য। প্রতিদিন সবজি এবং ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। শাকসবজি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার ত্বকের সঠিক পুষ্টি সরবরাহ করে, যা ত্বককে তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার ত্বককে উজ্জ্বল রাখে।
৫. ত্বকের জন্য স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চলুন
সুস্থ ত্বকের জন্য একটি কার্যকর স্কিন কেয়ার রুটিন গঠন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেসিক স্কিন কেয়ারের মধ্যে ক্লেনজিং, ময়েশ্চারাইজিং, এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। সপ্তাহে এক-দুইবার এক্সফোলিয়েশন করলে ত্বক অনেক বেশি ফ্রেশ এবং উজ্জ্বল থাকে।
৬. সেইফ ব্রাইটেনিং প্রোডাক্ট বেছে নিন
বয়সের সাথে সাথে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের উজ্জ্বলতা কমিয়ে দেয়। তাই ত্বকের ব্রাইটনেস ধরে রাখতে সেফ ব্রাইটেনিং উপাদানসমৃদ্ধ প্রোডাক্ট যেমন ভিটামিন সি, আলফা আরবুটিন ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো ত্বকের টোন উন্নত করে এবং দাগ কমাতে সাহায্য করে।
৭. ত্বক হাইড্রেটেড রাখুন
ত্বকের হাইড্রেশন ধরে রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে তার উজ্জ্বলতা হারায়, তাই প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন। এটি ত্বকের ভেতর থেকে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে।
৮. অতিরিক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না
অনেকেই একসঙ্গে অনেক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। স্কিন কেয়ার রুটিন যতটা সম্ভব মিনিমাল রাখুন এবং শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন।
৯. সূর্যের আলো এড়িয়ে চলুন
সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই সানস্ক্রিন ছাড়া বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং ছাতা বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন। সরাসরি রোদ ত্বক মলিন করে দেয় এবং তার উজ্জ্বলতা কমিয়ে দেয়।
১০. ফলমূল রাখুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়
ফলমূলে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে। এটি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাই প্রতিদিন পছন্দমত যেকোনো ফল খাবারের তালিকায় রাখুন।